থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায়
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায় এই বিষয় নিয়ে। আমাদের সমাজের অনেকেই রয়েছে যারা জানেন না থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়? বা থাইরয়েড কমানোর উপায়। তাই তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি।
আপনি যদি জানতে চান থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় এবং থাইরয়েড কমানোর উপায়। তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তো চলুন জেনে আসি থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায়।
পেজ সূচিপত্রঃ থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায়
- থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়
- থাইরয়েড কমানোর উপায়
- থাইরয়েড হলে কি খাওয়া উচিত
- থাইরয়েড রোগীর ওজন কমানোর উপায়
- থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
- থাইরয়েড রোগীর গর্ভধারণ
- শেষ কথাঃ থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায়
থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়
থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যদি থাইরক্সিন হরমোন তৈরিতে ঘাটতি হয় তাহলে থাইরয়েড গ্রন্থি নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকের এই পোস্টে আমরা থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় এ বিষয়ে জানব। আপনারা যারা এই পোস্টটি পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় ও থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জাম খাওয়ার উপকারিতা
- থাইরয়েডের সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা হল হাইপোথাইরয়েডিজম। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন হরমোন ঘাটতি হলে সমস্যা দেখা দেয়।
- পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে এটি কয়েক গুণ বেশি হয়ে থাকে।
- হরমোনের ঘাটতি হওয়ার কারণে অটোইমিউন ব্যবস্থার গোলমালের কারণে থাইরয়েড কোষ বিনষ্ট হওয়ার কারণে হাইপোথাইরয়েডিজম হয়।
- থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে কখনো কখনো থাইরক্সিন হরমোন অতিরিক্ত পরিমাণে নিঃসৃত হতে পারে। এ রোগের কারণ প্রধানত অটোইমিউন যাকে গ্রেবস ডিজিজ ও বলা হয়।
- থাইরয়েড গ্রন্থি তে টিউমার ও ক্যান্সার হয়।
- থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যাওয়া কে বলা হয় গলগন্ড। যা গলার সামনের অংশ ফুলে উঠে যায়।
- হাইপোথাইরয়েডিজম, ক্যান্সার যেকোনটিতে থাইরয়েড ফুলতে পারে।
থাইরয়েড কমানোর উপায়
উপরে আমরা থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় এই নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন জানবো থাইরয়েড কমানোর উপায় বা থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাবার উপায়। তো চলুন জেনে আসি থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাবার উপায় বা থাইরয়েড কমানোর উপায় গুলো।
- থাইরয়েড যেহেতু আয়োডিন অভাবজনিত রোগ। সেহেতু অভাবজনিত কারণে থাইরয়েড হয়ে থাকে। তাই থাইরয়েড রোগীকে বেশি বেশি আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমনঃ সামুদ্রিক মাছ শাকসবজি ও মৌসুমী ফল।
- থাইরয়েড রোগীকে প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। সেজন্য আপনার খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস ডিম ইত্যাদি খেলে থাইরয়েড কমানো যায়।
- উচ্চমানের আমিষ যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমনঃ মাছ মুরগির ডিম মাংস কলা ইত্যাদি।
- গ্লুটেন প্রোটিনযুক্ত খাবার খাবেন বেশি বেশি। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে।
- ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার বেশি বেশি খাবেন। কারণ ফ্যাটি এসিড লিভার কে সুস্থ রাখে। কারণ থাইরয়েড ঠিক রাখার জন্য লিভারের সুস্থতা অনেক দরকার।
- রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে। রাত জাগা থেকে দূরে থাকতে হবে। তাহলে আপনি থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাবেন।
- নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে হবে।
থাইরয়েড হলে কি খাওয়া উচিত
থাইরয়েড হলে আপনাকে কিছু পুষ্টি জনিত খাবার অবশ্যই খেতে হবে। উপরে আমরা থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় ও থাইরয়েড কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এখন আমরা জানবো থাইরয়েড হলে কি খাওয়া উচিত? কোন ধরনের খাবার খেলে থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এ বিষয়ে। তো চলুন জেনে আসি থাইরয়েড হলে কি খাওয়া উচিত তা জেনে নেই।
আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার দশটি উপকারিতা ও অপকারিতা
- আয়োডিনযুক্ত খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত
- সামুদ্রিক মাছ, শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকে খাওয়া উচিত।
- তামা ও লোহা জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। যেমনঃ কাজুবাদাম, বাদাম ইত্যাদি।
- আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত যেমন পালং শাক। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এটি খেলে থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ভিটামিন ও খনিজ খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যুক্ত খাবার বেশি বেশি রাখা উচিত।
থাইরয়েড রোগীর ওজন কমানোর উপায়
থাইরয়েডের কারণে অনেক সময় থাইরয়েড রোগীর ওজন বাড়তে থাকে। আপনার যদি থাইরয়েডের কারণে ওজন বেড়ে যায়। এবং ওজন কমানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাহলে এই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আজকের পোস্টে আলোচনা করব থাইরয়েড রোগীর ওজন কমানোর উপায় নিয়ে।
- খাদ্য তালিকা তৈরি করুনঃ আপনি প্রতিদিন যা খাবেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। কোন ধরনের খাবার খাবেন এবং কোন ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকবেন সেসব তালিকার মধ্যে রাখবেন।
- অল্প অল্প খাবার খাবেনঃ আপনার যদি থাইরয়েডের কারণে ওজন বেড়ে থাকে তাহলে আপনাকে অল্প পরিমাণে খাবার খেতে হবে যদি ওজন কমাতে চান। যেগুলো খাবেন সেগুলো যেন প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার হয়।
- শর্করা ও চিনি থেকে দূরে থাকুনঃ ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছে থাইরয়েড রোগীর কার্বোহাইড্রেট এবং চিনি খাওয়া উচিত নয়। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে শর্করা ও চিনিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকবেন।
- শরীর না ফুলে এমন খাবার খানঃ অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে ফুলে যায়। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই সেসব খাবার থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে।
- শরীরচর্চা বৃদ্ধি করুনঃ আপনার যদি থাইরয়েডের কারণে ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।
থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
এখন আমরা থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে আলোচনা করব। থাইরয়েড হলে কি কি খাবার খেতে হয়? কি খাবার খেলে থাইরয়েড থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেসব খাবার সম্পর্কে জানব। তো চলুন জেনে আসি থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ জাম খাওয়ার দশটি উপকারিতা অপকারিতা
- সর্বপ্রথম আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে।
- থাইরয়েড হরমোন ঘাটতি পূরণ করতে পারে এমন খাবার খেতে হবে যেমন নারিকেল তেল। নারিকেল তেল দিয়ে রান্না করা খাবার খেতে হবে।
- থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ওজন সঠিক রাখা খুব প্রয়োজন। এর জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এমন খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন এক বাটি করে দই খেতে হবে।
- ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে সামুদ্রিক মাছ।
- খাদ্যতালিকায় রাখুন আয়োডিন, টাইরোসিন নামক উপাদান। রোজ একটি করে ডিম খাবেন।
- প্রোটিনযুক্ত খাবার খাবেন। এক মুঠো করে বাদাম প্রতিদিন খাবেন।
- প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাবেন।
থাইরয়েড রোগীর গর্ভধারণ
এখন আমরা আলোচনা করব থাইরয়েড রোগীর গর্ভধারণ এই বিষয় নিয়ে। গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড দেখা দেওয়া এটা একটি সাধারন বিষয়। তবে গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড দেখা দিলে এটি সঠিক সময়ে চিকিৎসা ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। না হলে পরবর্তীতে এটি গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ নারীদের মধ্যে থাইরয়েড হরমোন ঘাটতি জনিত সমস্যা বেশি থাকে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকা
গর্ভবতী নারীদের থাইরয়েড পরীক্ষা অনেক দেশে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সন্তান ধারণের বিলম্ব, বারবার গর্ভপাত হলে অবশ্যই থাইরয়েড সমস্যা পরীক্ষা করতে হবে। গর্ভাবস্থায় এক থেকে দেড় মাস পরপর পরীক্ষা করে ওষুধ খেতে হবে। কারণ গর্ভবতী মায়ের থাইরয়েড সমস্যা সচেতনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ কথাঃ থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায়
উপরে থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় - থাইরয়েড কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা যারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন তারা উপরের পোস্টে সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় বা থাইরয়েড কমানোর উপায় সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও করতে নিয়মিত আমাদের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট ফলো করুন।
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন